এ সংলাপ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবে না: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের জন্য ডাক দিয়েছেন। তিনি এ সংলাপকে অর্থহীন বলে উল্লেখ্য করেন। এই সংলাপ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারবে না। এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, বাংলার জনগণকে বোকা ভাববে না। ২০১৮ সালে নির্বাচনে আগের রাতে ভোট দখল করে নিয়ে গেছে। পরে দিন জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ১৫৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তখন ও একটি সংলাপ করেছিল।
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন আবার সংলাপের জন্য ডাকাডাকি করছে রাষ্ট্রপতি। এই সংলাপ অর্থহীন। গণতন্ত্রের সমস্যার সমাধান হবে না। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আসবে না। নির্বাচন কমিশনের সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে সরকারের। নির্বাচনকালীন সরকারটা কে থাকবে। সেটা কি নিরপেক্ষ সরকার থাকবে, না হাসিনার সরকার থাকবে। যদি হাসিনার সরকার থাকে তাহলে ভোটও নিরপেক্ষ হবে না।
তিনি আরও বলেছেন, খালেদা জিয়া আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সংবিধানের ৪১০ ধারাতে সুযোগ আছে বিএনপির চেয়ারপারসনকে বিদেশে চিকিৎসার। কিন্তু নানান অজুহাতে বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার দেশের সকল সুন্দর জিনিস ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্র বিচার বিভাগসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। গুম খুন হত্যা অপহরণ এই সমস্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও জাতিসংঘ দেশের বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ সরকার জনগণ দেখে ভয় পায়। সরকারি বাহিনী দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গুম করে দিয়েছে। তাদের আজও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জনগণবিহীন এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য খালেদা জিয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এখনো তিনি হাসপাতালের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। সারা দেশের মানুষের দাবি বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর। কিন্তু এসব দাবি সরকারের কানে যায় না। যদি খালেদা জিয়ার কোনো কিছু ঘটে তবে এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, এ সরকার ১০ টাকা কেজি করে চাল দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে। এখন দেশে চালের দাম ৭০ টাকা । ঘরে ঘরে চাকরির কথা বলে ক্ষমতায় এসে এখন চাকরির জন্য লাখ লাখ টাকা গুনতে হচ্ছে চাকরি প্রার্থীদের।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের আইন আছে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর। তাকে বিদেশে পাঠানো অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সরকার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছেন না। সরকার তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছেন।
তিনি দেশের মানুষকে ১৯৭১ ও ১৯৯০ সালের মতো সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে উৎখাত করতে আহ্বান জানান। অবৈধ সরকার জনগণ দেখে ভয় পায়। সরকারি বাহিনী দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গুম করে দিয়েছে। তাদের আজও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জনগণবিহীন এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ কবীর জিন্নাহ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সত্যেন কান্ত পণ্ডিত ভজন, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরতাজ আলম বাহার, পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন জাদু, যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিনুর রহমান তুহিন, শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লিটন, কৃষক দলের আহ্বায়ক মনি, সাবেক সহ-সভাপতি জিয়া উদ্দিন কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিন্নহ খান, মহিলা দলের সভাপতি সাবিহা হাবিব, সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার মুন্নি উপস্থিত ছিলেন।